পাপের শহর যেখানে খোলামেলা দেহ ব্যবসা করা হয় |
পাপের শহর যেখানে খোলামেলা দেহ ব্যবসা করা হয়
কেমন হয় যদি এমন কোন শহরে আপনাকে পাঠানো হয় যেখানে আপনি যা ইচ্ছা করতে পারবেন, দেখতে পারবেন, যা খুশি খেতে পারবেন, যেমন খুশি তেমন সাজে ঘুরে বেড়াতে পারবেন? ভাবছেন এমনও কোন শহর পৃথিবীতে আছে নাকি? হ্যাঁ যা খুশি তা করতে পারার এই শহরের নাম হল লাস ভেগাস। “what happens in Vegas, stays in Vegas” এই স্লোগানটি আধুনিক পর্যটন ব্যবসায় অন্যতম বিখ্যাত একটি ট্যাগ লাইন, এমন কি হলিউডের অনেক বিখ্যাত সিনেমা কিংবা সিরিজেও এই লাইনটি ব্যবহার করা হয়েছে অনেক বার। শুধুমাত্র এই একটি লাইনের কারণে লক্ষ লক্ষ ভ্রমনপিপাসু মানুষ ছুটে এসেছে ‘সিন সিটি’ বা পাপের শহর নামে পরিচিত এই লাস ভেগাসে। পর্যটক ও লাস ভেগাসের মধ্যে এই টানের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় এই শহরের বাতাসে যে স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া যায় সেটা কে। এই শহরে এসে মানুষ সেই রূপ ধারণ করতে পারে যা সে নিজের বাড়ি বা শহরে চাইলেও করতে পারেনা, এই শহর মানুষ কে সেই সব কিছু থেকে মুক্তি দেয় যা থেকে মানুষ নিজ শহরে চাইলেও মুক্ত হতে পারেনা। নেভাডা অঙ্গরাজ্যের সবচেয়ে ঘনবসতি পূর্ণ আর যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ তম ঘনবসতির শহর এই লাস ভেগাস যা সংক্ষেপে ভেগাস নামেও সমানভাবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাত এই রিসোর্ট নগরী বিখ্যাত মূলত এর জুয়ার আসর, কেনাকাটার সুবিধা, বহুমুখী বিনোদন ও নৈশ প্রমোদের কারণে। এক কথায় বলতে গেলে পুরো লাস ভেগাস উপত্যকাটি নেভাডা রাজ্যের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সংস্কৃতির কেন্দ্র। নিজেরাই নিজেদের কে বিশ্বের বিনোদনের রাজধানী হিসেবে দাবিকারী এই ভেগাস। মস্ত বড় বড় ক্যাসিনো ওয়ালা হোটেলের এই শহরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বড় বাণিজ্যিক সম্মেলন গুলো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সংখ্যায় বলতে গেলে এই সম্মেলনের সংখ্যা প্রতিবছর ২২,০০০ এর কম হবেনা। জুয়ার আসরের জন্য বিখ্যাত এই শহরের লোকজন এতো বেশি জুয়া আসক্ত যে তারা নাকি যেকোনো বিষয় নিয়ে বাজি ধরে বসে থাকে। ১৯৮০ সালে লাস ভেগাস হাসপাতালের বেশ কিছু কর্মী কে চাকরী থেকে বাদ দিতে হয়েছিল কারণ তারা নাকি হাসপাতালের রুগীদের উপর বাজি ধরতো যে কোন রুগী কখন মারা যাবে। এমন কি একজন নার্স নাকি বাজিতে জিতার জন্য একজন রুগীকে হত্যা পর্যন্ত করেছিল। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ২০ টি হোটেলের অর্ধেকেরও বেশি হোটেল শুধু এই এক শহরে অবস্থিত। আর তাছাড়া এখানে মোট যে পরিমাণ হোটেল আছে সেগুলোর সব কয়টিতে মাত্র এক রাত করে থাকতে হলেও একজন মানুষের ২৮৮ বছর লেগে যাবে। হয়তো আন্দাজ করতে পারছেন কত বেশি হোটেল থাকতে পারে একটি শহরে। এমনি এমনিই তো আর ভেগাস অন্যতম প্রধান পর্যটন নগরী তে পরিণত হয়নি। প্রাপ্তবয়স্কদের বিনোদনের নানাবিধ সুযোগ ও উপায়ের ব্যবস্থা এই শহরকে দিয়েছে ‘সিন সিটি’ বা পাপের নগরীর উপনাম। কিন্তু অনেকে এটা জানেই না যে এই পাপের নগরীতেও কিন্তু পতিতাবৃত্তি অবৈধ। কি অবাক হলেন? অবাক হলেও এটাই সত্যি। ভেগাসে ঘুরে বেড়ালে দেখা মিলে অনেক কৃত্রিম ঝর্না ও লেকের। দারুণ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সেগুলো। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এইসব ঝর্না বা লেকে যে পানি ব্যবহার করা হয় তাকে বলা হয় গ্রে ওয়াটার বা ধূসর পানি যা তৈরি করা হয় সিঙ্ক, বাথটাব কিংবা গোসলখানার ব্যবহৃত পানিকে রাসায়নিক ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে। নৈশ প্রমোদের জন্য বিখ্যাত এই নগরী কিন্তু আবার পৃথিবীর সবচেয়ে আলোকিত নগরীও। মহাকাশ থেকে দেখলে পৃথিবীর সবচেয়ে আলো চকচকে যে স্থানটি দেখতে পাওয়া যায় সেটি হল এই ভেগাস। মানুষ জন অনেক বেশি না হলেও সারারাত ধরে মিলিয়ন মিলিয়ন বাতি জ্বলে থাকার কারণেই মূলত এই শহর এতো ঝলমলে থাকে। সত্যি কথা বলতে ভেগাসের আসল সৌন্দর্য ফুটে উঠে এই রাতের বেলাতেই। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্যেও জনসম্মুখে মাতলামি করা অপরাধ বলে বিবেচিত হলেও নেভাডায় প্রকাশ্যে মাতলামি করা কোন অপরাধ নয় বর্তমানে ভেগাসে ঘুরতে আসার পিছনে অনেক কারণ থাকলেও ৫০ এর দশকের দিকে মানুষের ভেগাসে ঘুরতে আসার সবচেয়ে প্রধান কারণ ছিল আণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ দেখা। ভিডিওটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক দিন ও সবাইকে জানিয়ে দিতে Facebook Share শেয়ার করুন। এবং পরবর্তীতে কোন বিষয়ের উপর ভিডিও দেখতে চান কমেন্ট করে জানান আমাদেরকে। ধন্যবাদ সবাইকে
0 মন্তব্যসমূহ